জীবন—সঙ্গীত

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বাংলা সাহিত্য - কবিতা | | NCTB BOOK

বলো না কাতর স্বরে                    বৃথা জন্ম এ সংসারে

                       এ জীবন নিশার স্বপন,

দারা পুত্র পরিবার                        তুমি কার কে তোমার

                     বলে জীব করো না ক্ৰন্দন;

মানব-জনম সার,                        এমন পাবে না আর

                     বাহ্যদৃশ্যে ভুলো না রে মন;

কর যত্ন হবে জয়,                        জীবাত্মা অনিত্য নয়

                     ওহে জীব কর আকিঞ্চন ।

করো না সুখের আশ,                    পরো না দুখের ফাঁস

                      জীবনের উদ্দেশ্য তা নয়,

সংসারে সংসারী সাজ,                    করো নিত্য নিজ কাজ,

                      ভবের উন্নতি যাতে হয় ।

দিন যায় ক্ষণ যায়,                          সময় কাহারো নয়,

                      বেগে ধায় নাহি রহে স্থির,

সহায় সম্পদ বল,                            সকলি ঘুচায় কাল,

                       আয়ু যেন শৈবালের নীর ।

সংসার-সমরাঙ্গনে                           যুদ্ধ কর দৃঢ়পণে,

                        ভয়ে ভীত হইও না মানব;

কর যুদ্ধ বীর্যবান,                            যায় যাবে যাক প্ৰাণ

                          মহিমাই জগতে দুর্লভ।

মনোহর মূর্তি হেরে,                          ওহে জীব অন্ধকারে,

                          ভবিষ্যতে করো না নির্ভর

অতীত সুখের দিনে,                         পুনঃ আর ডেকে এনে,

                            চিন্তা করে হইও না কাতর ।

মহাজ্ঞানী মহাজন,                          যে পথে করে গমন,
                          হয়েছেন প্রাতঃস্মরণীয়,

সেই পথ লক্ষ্য করে                         স্বীয় কীর্তি ধ্বজা ধরে

                          আমরাও হব বরণীয়

সমর-সাগর-তীরে,                         পদাঙ্ক অঙ্কিত করে

                         আমরাও হব হে অমর;

সেই চিহ্ন লক্ষ করে,                     অন্য কোনো জন পরে,

                         যশোদ্বারে আসিবে সত্বর ।

করো না মানবগণ,                      বৃথা ক্ষয় এ জীবন,

                        সংসার-সমরাঙ্গন মাঝে;

সঙ্কল্প করেছ যাহা,                       সাধন করহ তাহা,

                       রত হয়ে নিজ নিজ কাজে ।
 

Content added || updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

যুদ্ধক্ষেত্রকে
জীবনযুদ্ধকে
প্রতিরোধ যুদ্ধকে
অস্তিত্বকে
মানবতার কল্যাণ
যশ-খ্যাতি লাভ
বৈরাগ্য থেকে মুক্তি
সুখী-সমৃদ্ধ জীবন
নিজের উন্নতির জন্য
সমাজের উন্নতির জন্য
পরিবারের উন্নতির জন্য
জগতের উন্নতির জন্য
আত্মার অবিনশ্বরতা
সাধনা দ্বারা অমরত্ব লাভ
মানবজন্ম অত্যন্ত মূল্যবান
জীবনের ক্ষণস্থায়িত্ব
বাহাদৃশ্য
মনোহর মূর্তি
অতীত সুখের দিন
সংসার সমরাজান
বৃথা জন্ম ভাবা
সুখের আশা করা
সংসার সমরাঙ্গনে যুদ্ধ করা
ভবিষ্যতের উপর নির্ভর করা
জীবন কুসুমাস্তীর্ণ নয়
এ জীবন ক্ষণস্থায়ী
আয়ু ক্রমান্বয়ে ফুরিয়ে যায়
জীবন অবিনশ্বর নয়
সংসারে সমরাঙ্গনে যুদ্ধ কর দৃঢ়পণে
কর যুদ্ধ বীর্যবান, যায় যাবে যাক প্রাণ
সংকল্প করেছ যাহা, সাধন করহ তাহা
করো না মানবগণ, বৃথা ক্ষয় এ জীবন
বাহ্যদৃশ্যে না ভুলে
অতীতের কথা চিন্তা না করে
মহাজ্ঞানীদের পথ অনুসরণ করে
ভয়ে ভীত না হয়ে
যুদ্ধক্ষেত্রে
জীবন যুদ্ধে
মারামারিতে
মল্ল যুদ্ধে
সঙ্কল্প সাধন করা
ভবের উন্নতি
দৃঢ়পণে যুদ্ধ করা
মহাজ্ঞানীর পথ
বাউলদের
শিল্পীদের
সাহিত্যিকদের
ফেরিওয়ালাদের
সুখের ফাঁস
দুঃখের ফাঁস
খুশির মালা
ফুলের মালা
প্রমথ চৌধুরী
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সিকানদার আবু জাফর
বাহ্যদৃশ্যে ভুলো নারে মন
এ জীবন নিশার স্বপন
আয়ু যেন শৈবালের নীর
মহিমাই জগতে দুর্লভ
সংসার সমরাঙ্গনে টিকে থাকা
সুখ লাভ করা
দুখের ফাঁস পরা
সাধনা করা
এ জীবন নিশার স্বপন
মহিমাই জগতে দুর্লভ
আয়ু যেন শৈবালের নীর
চিন্তা করে হইও না কাতর
বৈরাগ্যে জীবন
জীবনের মূল্যবোধ
জীবনের আকাঙ্ক্ষা
স্বদেশপ্রেম
স্মৃতি রোমন্থন
ভবিষ্যৎ ভাবনা
অবাস্তব ভাবনা
সুখময় ভাবনা
ওহে জীব কর আকিঞ্চন
এমন পাবে না আর
জীবনের উদ্দেশ্য তা নয়
ভয়ে ভীত হইও না মানব
নিত্যানন্দ দাশের
প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারীর
বারীণ ঘোষের
সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের
কলকাতা বাংলা কলেজের
ঢাকা কলেজের
কলকাতা সংস্কৃত কলেজের
গীতিকাব্য
কাহিনিকাব্য
পত্রকাব্য
মহাকাব্য
মানুষ মহীয়ান
বৃথা জন্ম এ সংসারে
সংসারে সার্থক এ সংসারে
মানুষ অমর
ফুলের মালা
আনন্দের মালা
দুঃখের ফাঁস
সুখের ফাঁস
অনিবার্য
সম্ভাবী
নিবার্য
প্রতিরোধী
আনুমানিক ১৭২০ খ্রিস্টাব্দে
আনুমানিক ১২৬০ খ্রিস্টাব্দে
আনুমানিক ১৬২০ খ্রিস্টাব্দে
আনুমানিক ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে
কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে
নাটোরের আজিমনগরে
কেশবপুরের পাঁজিয়ায়
সন্দ্বীপের সুধারামপুরে
প্রাক-মধ্যযুগের
মধ্যযুগের
আধুনিক যুগের
মধ্যযুগ পরবর্তী
সপ্তদশ শতকের একজন প্রখ্যাত কবি
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের পুরোধা
ষোড়শ শতকের অন্যতম বিশিষ্ট লেখক
অমর কথাসাহিত্যিক
দুর্বার ক্ষোভের অনুভূতি
চাপা আক্রোশের অনুভূতি
অনন্য মমত্বের অনুভূতি
অসহনীয় বিরক্তিভাব
আবদুল হাকিমের উপন্যাস
দৌলত কাজীর কাব্য
আলাওলের কার্য
আবদুল হাকিমের কাব্যগ্রন্থ
শাহাদাৎ হোসেনের
সুফিয়া কামালের
আবদুল হাকিমের
কাজী নজরুল ইসলামের
আবদুল হাকিমের কাব্যগ্রন্থ
আল মাহমুদের উপন্যাস
শাহ মুহম্মদ সগীরের কাব্যগ্রন্থ
ফররুখ আহমদের কাব্যগ্রন্থ
কাব্যনাট্য
কাব্যগ্রন্থ
ছোটগল্প
উপন্যাস
শহরনামা
পাঞ্জেরি
বখতিয়ারের ঘোড়া
উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ
অনুপম ব্যক্তিত্বের
চমৎকার উপমার
অনুপম ছন্দের
সুন্দর গতিময়তার
১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে
১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে
১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে
১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে
কবিদের কথা
যাদের বইপত্র পড়ার অভ্যাস নেই তাদের কথা
কবিবিরোধীদের কথা
বাংলা ভাষা অবজ্ঞাকারীদের কথা
সে আমাকে সবকিছু বলল
তারা সবাই আমাকে বলল
তারা সবাই অনেক কিছু বলল
সে আমাকে সবকিছু বলল
শুধু মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগ
বাংলা ভাষার উৎপত্তি
সব ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা
বিদেশি ভাষার প্রতি আকর্ষণ
শুধু মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগ
সব ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা
বাংলা ভাষার উৎপত্তি
বিদেশি ভাষার প্রতি আকর্ষণ
আল্লাহ ও নবির গুণকীর্তন
আল্লাহ ও নবির ভাষা
আল্লাহ ও নবির কার্যক্রম
আল্লাহ ও নবির শপথ
জনসাধারণের বোধগম্য
সকল মানুষের জন্য উপকারী
শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বেশি উপযোগী
প্রত্যেকের প্রিয় ভাষা
বাংলা ভাষা
প্রাচীন বক্সীয় ভাষা
মাতৃভাষা
বিদেশি ভাষা
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নের উত্তর দাও

শহরে বহু পরিশ্রম করে গ্রামের স্কুলে ছেলে সাজ্জাদকে পড়ালেখা করান। কখনো ছেলের পড়াশোনায় যেন বিঘ্ন সেজন্য বহু কষ্টে নিজের কাজ চালিয়ে মান এবং গ্রামে টাকা পাঠান। সাজ্জাদও বাবার স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে দৃঢ়চিতে পড়াশোনা করে এবার মেডিকেলে ভর্তি হয়।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নের উত্তর দাও

"জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প,
যা কিছু বলার যাও বলে যাও, যা কিছু করার যাও করে যাও
পাবে না সময় আর হয়তো " 

জীবন নিশার স্বপন
বৃথা ক্ষয় এ জীবন
আয়ু যেন শৈবালের নীর
ওহে জীব করো আকিদান
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নের উত্তর দাও

"তীরহারা এই ডেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে 

আমরা ক'জন নবীন মাঝি হাল ধরেছি শক্ত করে রে।"

সংগ্রামী চেতনা
অপ্রত্যাশা
আত্মাকেন্দ্রিকতা
দায়িত্বশীলতা
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নের উত্তর দাও

অজস্র মৃত্যুরে লঙ্ঘি হে নবীন, চলো অনায়াসে,

 মৃত্যুঞ্জয়ী জীবন-উল্লাসে-

কর যুদ্ধ বীর্যবান যায় যাবে যাক প্রাণ
সংসারে সংসারী সাজ কর নিত্য নিজ কাজ
কর যত্ন হবে জন্ম, জীবাত্মা অনিত্য নয়
করো না মানবগণ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নের উত্তর দাও

স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা প্রাণের ভয় না করে জীবন বহি রেখে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। তাদের কাছে প্রাণ বাঁচিয়ে রেখে চলে যাবার থেকে দেশের জন্য শহিদ হওয়াটা অনেক গর্বের।

মানব জনম সার, এমন পাবে না আর
দারা পুত্র পরিবার, তুমি কার কে তোমার
করো না সুখের আশ, পরো না দুখের ফাঁস
কর যুদ্ধ বীর্যবান, যায় যাবে যাক প্রাণ

কবি পরিচিতি

 হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৩৮ সালের ১৭ই এপ্রিল হুগলি জেলার গুলিটা রাজবল্লভহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কৈলাশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার খিদিরপুর বাংলা স্কুলে পড়াশোনাকালে আর্থিক সংকটে পড়েন। ফলে তাঁর পড়াশোনা তখন বন্ধ হয়ে যায়। অতঃপর কলকাতা সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারীর আশ্রয়ে তিনি ইংরেজি শেখেন। পরবর্তীকালে হিন্দু কলেজে সিনিয়র স্কুল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি ১৮৫৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি সরকারি চাকরি, স্কুল-শিক্ষকতা এবং পরিশেষে আইন ব্যবসায় নিয়োজিত হন। মাইকেল মধুসূদন দত্তের পরে কাব্য রচনায় তিনিই ছিলেন সবচেয়ে খ্যাতিমান । স্বদেশপ্রেমের অনুপ্রেরণায় তিনি বৃত্রসংহার নামক মহাকাব্য রচনা করেন। এছাড়া তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্য : চিন্তাতরঙ্গিনী, বীরবাহু, আশাকানন, ছায়াময়ী ইত্যাদি। ২৪শে মে ১৯০৩ সালে হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন ।

Content added By

শব্দার্থ ও টিকা

কাতর স্বরে- দুর্বল কণ্ঠে, করুণভাবে। দারা - স্ত্রী। বাহ্যদৃশ্যে- বাইরের জগতের চাকচিক্যময় রূপে বা জিনিসে। জীবাত্মা – মানুষের আত্মা, আত্মা যদিও অমর, কিন্তু মানুষের মৃত্যু অনিবার্য, কাজেই দেহ ছেড়ে আত্মা একদিন চলে যাবে, চিরকাল দেহকে আঁকড়ে থাকতে পারবে না। অনিত্য – অস্থায়ী, যা চিরকালের নয়। আকিঞ্চন – চেষ্টা, আকাঙ্ক্ষা; আশ – আশা। ভবের -জগতের, সংসারের। সমরাঙ্গনে – যুদ্ধক্ষেত্রে (কবি মানুষের জীবনকে যুদ্ধক্ষেত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন)। বীর্যবান – শক্তিমান। মহিমা — গৌরব। প্রাতঃস্মরণীয় – সকাল বেলায় স্মরণ করার যোগ্য, অর্থাৎ সকলের শ্রদ্ধা ও সম্মানের পাত্র। ধ্বজা – পতাকা, নিশান। বরণীয় – সম্মানের যোগ্য। সংসারে-সমরাঙ্গনে – যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসী সৈনিকের মতো সংসারেও নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মোকাবেলা করে বেঁচে থাকতে হবে। স্বপন – রাতের স্বপ্নের মতোই মিথ্যা বা অসার। আয়ু যেন শৈবালের নীর - শেওলার ওপর পানির ফোঁটার মতো ক্ষণস্থায়ী। স্বীয় – নিজ, আপন। পদাঙ্ক – কোনো মহৎ ব্যক্তির কৃতকর্ম বা চরিত্র । যশোদ্বারে – খ্যাতির দ্বারে ।
 

Content added By

পাঠ পরিচিতি

জীবন কেবল নিছক স্বপ্ন নয়। কাজেই এ পৃথিবীকে শুধু স্বপ্ন ও মায়ার জগৎ বলা যায় না। স্ত্রী-পুত্র-কন্যা এবং পরিজনবর্গ কেউ কারও নয়, একথাও ঠিক নয়। মানব- জন্ম অত্যন্ত মূল্যবান। মিথ্যা সুখের কল্পনা করে দুঃখ বাড়িয়ে লাভ নেই তা আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যও নয়। সংসারে বাস করতে হলে সংসারের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। কেননা বৈরাগ্যে মুক্তি নেই । আমাদের জীবন যেন শৈবালের শিশিরবিন্দুর মতো ক্ষণস্থায়ী। সুতরাং মানুষকে এ পৃথিবীতে সাহসী যোদ্ধার মতো সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হবে। মহাজ্ঞানী ও মহান ব্যক্তিদের পথ অনুসরণ করে আমাদেরও বরণীয় হতে হবে। কেননা জীবন তো একবারই। নেতিবাচকতা পরিহারপূর্বক মহামানবের পদচিহ্ন অনুসরণ করে জীবনপাঠের দীক্ষা গ্রহণের কথা কবিতাটিতে প্রকাশিত হয়েছে। 'জীবন সঙ্গীত' কবিতাটি মার্কিন কবি 'Henry Wadsworth Longfellow'- (১৮০৭-১৮৮২) এর ‘A Psalm of life' শীর্ষক ইংরেজি কবিতার ভাবানুবাদ ।

Content added By
Promotion